বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল (bills) রাজ্যপালেরা (governors) কতদিন সম্মতি (decision) না দিয়ে আটকে রাখতে পারেন তা নিয়ে অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বিতর্ক চলছে বহুদিন। সেই তালিকায় প্রথম থেকেই আছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের বর্তমান রাজ্যপাল আনন্দ বোস তাঁর পূর্বসূরি জগদীপ ধনকড়ের মতোই বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল আটকে রেখেছেন।
ফলে সরকারি সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যাচ্ছে না। বিরোধীরা যে পদক্ষেপকে রাজ্যপালদের 'বিল-রাজনীতি' বলে অভিহিত করছে। কারণ, বিজেপি শাসিত রাজ্যে বিধানসভায় বিল পাশ হওয়ার পরদিনই রাজ্যপালদের সম্মতি দেওয়ার একাধিক দৃষ্টান্ত বেশ কয়েকটি রাজ্যে রয়েছে।এই প্রেক্ষাপটে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) পর্যবেক্ষণ নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। দেশের শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, রাজ্যপালের এই ব্যাপারে নিজেদের ইচ্ছানুসারে চলতে পারেন না। তাদের যত দ্রুত সম্ভব সিদ্ধান্ত জানাতে হবে।মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে 'দ্য ওয়াল'-কে বলেছেন, 'আমি মনে করি সংবিধান রক্ষার লক্ষ্যে শীর্ষ আদালতের উচিত হবে বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে রাজ্যপালদের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া।' তাঁর মতে, তেলঙ্গনার রাজভবনের উদ্দেশে সুপ্রিম কোর্ট যে পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে তা সব রাজ্যপালের উদ্দেশেই বার্তা। সুতরাং বাংলার রাজভবনে আটকে থাকা বিলগুলিও এবার ছাড়া উচিত রাজ্যপালের।
এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।বিমান বলেন, 'রাজ্যপালরা দিনের পর দিন বিল ফেলে রাখতে পারেন না। সংবিধানে নির্দিষ্ট কোনও সময়ের উল্লেখ নেই ঠিকই। কিন্তু তাই বলে রাজভবনে দীর্ঘদিন ধরে কোনও বিল কারণ ছাড়া ফেলে রাখা অসাংবিধানিক, অনৈতিক। এতে সরকারের কাজে বিলম্ব ঘটে।'স্পিকার বলেন, 'আমি আগেও বলেছি, আমার ব্যক্তিগত মতামত রাজভবনে কোনও বিল পাঠানোর পর সেই বিল যদি দিনের পর দিন কোনও কারণ ছাড়া ফেলে রাখেন, তাহলে ৬ মাস পর সেই বিল পাশ হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে, এই মর্মে আইন ও সংবিধানিক বিধি চালু করা হোক।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল তামিলিসাই সুন্দররাজনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া রাজ্য সরকারের মামলায় বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে সম্মতির বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছে সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদটির ব্যাখ্যা দিয়ে। তেলেঙ্গানার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের অভিযোগ, তিনি প্রায় দশটি বিল আটকে রেখেছেন।সেই মামলায় শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সংবিধানের ২০০ নম্বর অনুচ্ছেদটির ব্যাখ্যা করে বলেন, সেখানে বলা আছে রাজ্যপালরা বিল হাতে পাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব সেটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিচারপতিরা বলেন, ওই অনুচ্ছেদে উল্লেখিত 'অ্যাজ সুন অ্যাজ পসিবল' তথা যত শীঘ্র সম্ভব কথাটি রাজ্যপালদের সর্বদা বিবেচনায় রাখতে হবে।মঙ্গলবার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেন, 'সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণে আমি খুশি। তবে এটা আরও আগে হলে আরও ভাল হত। সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছে, এতে সত্যিই আমরা খুশি।'
No comments:
Post a Comment